প্রকাশিত: অক্টোবর ৫, ২০২২, ০৬:১২ এএম
আলেশা মার্টের প্রতারণায় এখন দিশেহারা প্রতারিত গ্রাহকরা। বিনিয়োগের টাকা ফেরত পাবার জন্য তারা মাসের পর মাস অপেক্ষা করছেন। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পরও তাদের অর্থ ফেরত দিচ্ছে না আলেশা মার্ট। অনেককে চেক দেয়া হলেও তাদের চেক ডিজঅনার হয়ে গেছে।
গ্রাহকদের দাবি, আলেশা মার্ট প্রধান লাইভে এসে বেশ কয়েকবার গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেয়ার তারিখ জানালেও সেই তারিখ কখনোই বাস্তবায়ন হয়নি। এ অবস্থায় গ্রাহকদের কেউ কেউ অভিযোগ জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার অধিদফতরে। আবার কেউ কেউ মামলা করেছেন বিভিন্ন থানায়। এসব মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও আলেশা মার্টের প্রধানকে অজ্ঞাত কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।
আলেশা মার্টের প্রতারণার শিকার হওয়া ৩৩ জনের কাছ থেকে অভিযোগ এসেছে সিটি নিউজ ঢাকার হাতে।
তাদের একজন, খুলনার রাজু আহমেদ। আলেশা মার্ট থেকে বিভিন্ন পণ্য কিনতে প্রায় ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। কিন্তু পণ্য হাতে পাওয়ার আগেই বন্ধ হয়ে যায় আলেশা মার্ট।
যদিও পরবর্তীতে আলেশা মার্ট থেকে চেক পান তিনি। তবে চেকটি ব্যাংক থেকে ডিজঅনার করা হয় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, `চেক বাউন্স করার পর আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুর আলম শিকদারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করি। কিন্তু তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না।`
রাজু বলেন, ‘তাকে উকিল নোটিশ পাঠাই। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করছেন না তিনি। এরপর সেপ্টেম্বরের শুরুতে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য হই।’ তিনি আরও বলেন, ‘মামলাটি খুলনা জুডিশিয়াল আদালতে উঠানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে সমন জারি হওয়ার কথা রয়েছে।’
এ সময় রাজুর কণ্ঠে হতাশা দেখা যায়। রাজু বলেন, ‘আমি একজন ডিশ ব্যবসায়ী। নিজের জমানো টাকাগুলো আলেশা মার্টে বিনিয়োগ করি। ধারণাও করতে পারিনি, মঞ্জুর আলম প্রতারণার শিকার হব। রাস্তায় অনেক নেমেছি। অনেকের কাছেই গেছি। কিন্তু কোথাও সুফল পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘এবার বাধ্য হয়ে মামলা করেছি। টাকা ফেরত না পেলেও যেনো তার জেল হয়। তাতে অন্তত নিজের মনকে শান্তি দিতে পারবো।’
টাকা না পেয়ে ভোক্তা অধিকার অধিদফতরে অভিযোগ করেছেন জুয়েল পারভেজ নামের আরেক গ্রাহক। তিনি আলেশা মার্টে ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। তাকে একটি চেক দেয়া হয়। কিন্তু সে চেকটিও ব্যাংক থেকে ডিজঅনার করা হয়।
এতে বাধ্য হয়ে ভোক্তা অধিকার অধিদফতরে অভিযোগ করেন তিনি।
আলেশা মার্ট কাস্টমার্স এসোশিয়েশন নামক ফেসবুক ভিত্তিক একটি গ্রুপে তিনি এ বিষয়টি জানান। তিনি লিখেন, ‘অনলাইনে ভোক্তা অধিকার অধিদফতরে অভিযোগ করেছি। আপনারা সবাই অভিযোগ করুন। ঢাকার বাইরে যারা আছেন তারা সবাই অনলাইনে ভোক্তা অধিকার অধিদফতরে অভিযোগ করুন।’
রাজু ও পারভেজের মতো এমন অসংখ্য গ্রাহক রয়েছেন যারা নিজেদের বিনিয়োগের টাকা ফেরত পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। তাদের দাবি, যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে তাদের পাওনা পরিশোধ করা হয়।
এআরআই/এল