প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২২, ০৯:১০ পিএম
আর কত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে গ্রেফতার হবেন আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুরুল আলম শিকদার? প্রশ্ন উঠেছে এমনটাই। এখন পর্যন্ত একাধিক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও অদৃশ্য কারণে গ্রেফতার হননি তিনি। লোভনীয় অফার এবং চটকদার বিজ্ঞাপন তৈরি করে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করেছিল ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্ট। কিন্তু তা যে ছিল প্রতারণার জন্য এত দিনে বুঝেছেন গ্রাহকরা। প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়েছেন বেশিরভাগ ভুক্তভোগী। মামলাও করেছেন অনেকে কিন্তু তাতে মেলেনি কিছু। যদিও গ্রাহকদের মামলায় বেশ কয়েকবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুরুল আলম শিকদার ও তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে। কিন্তু কোনো ফল পায়নি গ্রাহকরা।
গত বছর নভেম্বরে প্রায় ৪৫ হাজার গ্রাহকের কয়েক’শ কোটি টাকা অগ্রীম নিয়ে বনানীর অফিসে নিজেদের কার্যক্রম বন্ধ করে আলেশা মার্ট। এরপর ডিসেম্বরে নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে অফিশিয়াল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে প্রতিষ্ঠানটি। তারপরই রাস্তায় নেমে আসে গ্রাহকরা। অনলাইনেও চলে প্রতিবাদ। এরপর ফেব্রুয়ারিতে হাতেগোনা কিছু সংখ্যক গ্রাহক টাকা ফেরত পান। কিন্তু তখনও প্রতিষ্ঠানটির নিকট কয়েক কয়েক’শ কোটি টাকা পাওনা ছিল গ্রাহকরা। আবার কিছু গ্রাহকদের চেক দেয়া হয়। কিন্তু চেকের টাকা ব্যাংকে তুলতে গেলে টাকা না থাকায় তা ডিজঅনার হয়।
টাকা ফেরত না পেয়ে আইনের দারস্থ হন ভুক্তভোগীরা। মামলাও করেন অনেকে। বেশ কয়েকটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয় মঞ্জুরুল আলম শিকদার ও তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরী বিরুদ্ধে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ বিষয়ে তৎপরতা দেখা যায়নি।
সিটি নিউজ ঢাকার হাতে মঞ্জুরুল আলম শিকদার ও তার স্ত্রী সাদিয়া চৌধুরীর বিরুদ্ধে জারি হওয়া বেশ কয়েকটি গ্রেফতারি পরোয়ানার কপি রয়েছে। সেগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভিন্ন ভিন্ন মামলায় বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকবার তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। এমনকি আদালত থেকেও তাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়। তবে সেই হাওয়া স্পর্শও করেনি তাদের।
আলেশা মার্ট প্রধান মঞ্জুরুল আলম শিকদারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া সত্ত্বেও গ্রেফতার না হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করতে নামে সিটি নিউজ ঢাকা। সেখানে গোপন লেনদেন সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়।
আলেশা মার্ট কাস্টমারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুনের দেয়া তথ্যমতে আলেশা মার্টের নিকট থেকে ২৫৮ কোটি টাকা পাওনা রয়েছেন প্রায় ৭ হাজার গ্রাহক। তবে এই টাকা ফেরত পাবে কিনা সেই নিশ্চয়তা সংশয় গ্রাহকদের। তাদের দাবি দ্রুতই গ্রেফতার করা হোক মঞ্জুরুল আলম শিকদারদের।
আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগের বিষয়ে জানতে সিটি নিউজ ঢাকার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম শিকদারের সঙ্গে। সিটি নিউজ ঢাকাকে তিনি জানান, তার এবং আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো অসত্য এবং বিভ্রান্তিকর। তবে মামলা, গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং বিভিন্ন দফতরের তদন্ত বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো কথা বলেননি তিনি।
এআরআই/এএল