• ঢাকা সোমবার
    ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

সস্ত্রীক দেশত্যাগ করতে পারেন আলেশা মার্ট চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল!

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২, ০৪:১৩ এএম

সস্ত্রীক দেশত্যাগ করতে পারেন আলেশা মার্ট চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল!

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সস্ত্রীক দেশত্যাগ করতে পারেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম। অতি সম্প্রতি একটি গোপন বৈঠকের আলোচনায় এমন ইঙ্গিত মিলেছে।

জানা যায়, সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিয়ে এক গোপন বৈঠকে বসেন আলেশা মার্ট চেয়ারম্যান। রাজধানীর একটি অভিজাত এলাকায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত কর্মকর্তাদের তিনি জানান, এই প্রতিষ্ঠান আর ঘুরে দাঁড়ানোর অবস্থায় নেই। 

আলেশা মার্ট প্রধান আক্ষেপ করে বলেন, তদন্ত সংশ্লিষ্টদের ঘুষ দিতে দিতে আমি পেরেশান। প্রতিমাসে কোনো না কোনো অজুহাতে কোটি কোটি টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে। ইনিয়ে বিনিয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ দুই হাত তিন হাত ঘুরিয়ে এই ঘুষের টাকা নিচ্ছেন।’

মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘অবস্থা এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে এতে করে তার দেশে থাকাই কঠিন হয়ে গেছে। তদন্তের সঙ্গে জড়িতদের কেউ কেউ চায় আমি দেশে থেকে এভাবেই তাদের বড় দাগের মাসোহারা দেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘তদন্তকারীরা এখন পর্যন্ত যত টাকা নিয়ে গেছে, এই টাকা দিয়ে প্রতারিত গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করা যেত।’

বৈঠকে উপস্থিত একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আলেশা মার্ট প্রধানের গোপন বৈঠকের তথ্য ফাঁস করেছেন।

এর আগে প্রতারণার অভিযোগে আলেশা মার্টের বিরুদ্ধে গত বছরের সেপ্টেম্বরে তদন্ত শুরু করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তারা জানায় বিভিন্ন ব্যাংকে আলেশা মার্টের ৫৬টি হিসাব রয়েছে। গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত আলেশা মার্টের ওই হিসাবগুলোতে গ্রাহকেরা প্রায় ২ হাজার ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা জমা করেছেন। এর মধ্যে আলেশা মার্ট ১ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আলেশা মার্ট ৮ হাজারের বেশি মোটরসাইকেলের অর্ডার নিয়ে ডেলিভারি না দিয়ে মাসের পর মাস গ্রাহকদের ঘোরাচ্ছে। এর বাইরেও বিভিন্ন ধরনের আরও অন্তত ৫ হাজার পণ্যের অর্ডারের বেশিরভাগই আটকে রাখা হয়েছে। অথচ এসব পণ্যের অর্ডার দেয়া গ্রাহকরা আলেশা মার্টকে অগ্রিম টাকাও পরিশোধ করেছেন অনেক আগেই। শুধু মোটরসাইকেলের অর্ডার দেয়া গ্রাহকেরই ১৪৬ কোটি টাকা আটকে রেখেছে আলেশা মার্ট নামে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি।

বিভিন্ন মাধ্যমে লোভনীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে ই কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্ট। ঢাক ঢোল পিটিয়ে বাজারে আসলেও কাস্টমারদের নানা ধরনের ভোগান্তিতে ফেলেছে তারা। গ্রাহকদের নানা প্রলোভনে ফেলে মেম্বারশিপ বিক্রি করেছে। কিন্তু মেম্বারশিপ এর যথাযথ কোন সুবিধা পায়নি গ্রাহকরা। অর্ডারের নামে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের সঙ্গে নানা কৌশলে প্রতারণা করেছে।

 

তারা বিভিন্ন প্রকার আন-অফিসিয়াল মোবাইল ফোন সেট বিক্রয় করেছে যা থেকে বাংলাদেশ সরকার অনেক রাজস্ব হারিয়েছে। আবার লোভনীয় অফার দিয়েছিল বাইকের উপর। বলা হয়েছে ১-৩৫ দিনে ডেলিভারি সম্পূর্ণ করবে। কিন্ত কাস্টমার বাইক অর্ডার করে রীতিমতো জিম্মি হয়েছে তাদের কাছে।

শুধু তাই নয়, আলেশা মার্ট অভিনব কায়দায় ক্রেতার তথ্য সংগ্রহ করে মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে। আলেশা মার্টের চেয়ারম্যানের বহু তথ্য এখনও অজানা থেকে গেছে। একটি রাষ্ট্রীয় সংস্থা তার ব্যাপারে যে ধরনের তথ্য-উপাত্ত পেয়েছে যা পিলে চমকানোর মতো। হয়তো এ কারণেই আলেশা মার্টের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল ইসলাম পালিয়ে যাবার নিরাপদ রুট খুঁজছেন। অপরদিকে প্রতারিত গ্রাহকরাও একাট্টা হয়ে তার ওপর হামলে পড়তে পারে। এমন তথ্য মিলছে নানাজনের কাছ থেকে। 

 জেডআই/

অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ