• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

সয়াবিনের কৃত্রিম সংকট

প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২২, ০৮:৫০ পিএম

সয়াবিনের কৃত্রিম সংকট

সিটি নিউজ ডেস্ক

বাজারে সয়াবিন তেলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। রাতারাতি দোকানের সয়াবিন তেল উধাও। ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন কোনো দোকানেই মিলছে না। দোকানে থরে থরে সাজানো সয়াবিনের বোতল আর দেখা যাচ্ছে না। কোম্পানিগুলো সয়াবিন সরবরাহ করছে না। ব্যবসায়ীরা যে যেভাবে পারছে সেভাবেই ক্রেতাদের কাছে সয়াবিন তেল বিক্রি করছে। অসহায় ক্রেতা ব্যবসায়ীর মর্জি অনুযায়ী দাম পরিশোধে বাধ্য হচ্ছেন। ১৬৮ টাকার বোতলজাত সয়াবিন তেল ২০০ টাকা লিটার দরে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতা। বাজার ঘুরে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

রাজধানীর অনেক বাজারের এবং পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। যেসব দোকানে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে, তা বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সুযোগ বুঝে ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন বিক্রেতারা।

২ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পবিত্র রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের মজুদ, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর থেকেই বাজারে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। 

তারা জানিয়েছেন, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৩১ মের পর থকে সয়াবিন এবং ৩১  ডিসেম্বর থেকে পামঅয়েল খোলা অবস্থায় বিক্রি করা যাবে না। এই সময়ের পরে সয়াবিন ও পামতেল বোতলজাত করে বিক্রি করতে হবে। একই সঙ্গে দাবি অনুযায়ী সয়াবিন ও পামতেলের দাম আরও বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। 

এখন বাজারে সয়াবিনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্দেশে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা সয়াবিন ও পামতেলের মজুদ গড়ছেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ বিষয়টি টের পেয়ে মাঠে নেমেছে। দায়ী ব্যক্তিদের সাজা দেওয়ার সংবাদও পাওয়া যাচ্ছে।

৩ মার্চ সয়াবিন তেল মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা এবং সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে তেল বিক্রি করার অপরাধে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ‘মায়ের দোয়া স্টোর’কে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। সাধারণ মানুষের কাছে সরকার নির্ধারিত মূল্যের বেশি দামে বিক্রি করছে। তাদের কাছে মূল্য তালিকা নেই। বিক্রির পরিমাণ খুব কম। দাম আরও বাড়লে বিক্রির পরিকল্পনা করছিল। অথচ বাজারে তেল নেই। কৃত্রিম সংকট তৈরির একটা পাঁয়তারা তাদের ছিল। এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং সরকার নির্ধারিত মূল্য তালিকা আমরা সেখানে টানানোর ব্যবস্থা করেছি।

রাজধানীর অনেক বাজারের এবং পাড়া মহল্লার মুদি দোকানে সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। যেসব দোকানে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে, তা বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সুযোগ বুঝে ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন বিক্রেতারা। শুধু রাজধানী নয়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকেও একই ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তারা জানিয়েছে, সয়াবিন তেলের সংকটের খবর পাওয়া গেছে। কদিন ধরে এ সংকট শুরু হয়েছে, যা এখন প্রকট। ফলে অনেক দোকানে এখন প্রতি লিটার তেলের দাম চাওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা পর্যন্ত।

রাজধানী ঢাকার সবচেয়ে বড় পাইকারি তেলের বাজার মৌলভীবাজারেও সয়াবিন তেলের সংকট। সেখানে তেল কিনতে গিয়ে ফিরে আসছেন খুচরা ক্রেতারা। কারও কাছে সয়াবিন থাকলেও সেটা গোপনে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। 

মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতা গোলাম মাওলা জানিয়েছেন, অভিযোগ সঠিক নয়। আমরা কোনো তেল মজুদ করিনি। কোম্পানিগুলোই তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। ফলে বাজারে অস্থিরতা কাজ করছে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজার পরিস্থিতিও আমাদের অনুকূলে নয়। 

সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা জানিয়েছেন, তারা আগের মতোই প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ তেল সরবরাহ করছেন। পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা রমজান সামনে রেখে সয়াবিন মজু করছেন। এজন্য বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হচ্ছে। কারখানায় কোনে সোমস্যা নেই।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, কিছুদিন আগে তারা এসেছিলেন তেলের দাম আরও বাড়ানোর বিষয়ে। আমরা পরিষ্কার বলে দিয়েছি- নট পসিবল (সম্ভব নয়)।  সাংবাদিকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই। আমাদের প্রশ্ন করেই শেষ করবেন না, আপনারা বাজারেও ঢুকে পড়েন। আপনারা ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন।

ডা

অর্থ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ