প্রকাশিত: মে ১০, ২০২১, ০৯:১৪ পিএম
রান্নার
সিলিন্ডার গ্যাসের দাম নির্ধারণ করে
দিয়েছিল সরকার। কিন্তু এবারও মানতে চাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। বিক্রি
করছেন নিজেদের নির্ধারণ করা দামেই। তারা
বলছেন, এলপিজির যে মূল্য নির্ধারণ
করে দেয়া হয়েছে, তা
যৌক্তিক নয়। অন্যদিকে সরকারের
বক্তব্য, সবার মতামত নিয়েই
দাম নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।
নির্ধারিত দামেই বিক্রি করতে হবে এলপিজি।
সৌদি
সিপির সঙ্গে সমন্বয় রেখেই প্রতি মাসে এলপিজির দাম
নির্ধারণ করে সরকার। এর
অংশ হিসেবে গত ২৯ এপ্রিল,
মে মাসের জন্য নতুন মূল্য
ঘোষণা করে বাংলাদেশ এনার্জি
রেগুলেটরি কমিশন- বিইআরসি। নতুন নির্ধারিত দাম
অনুযায়ী, বেসরকারি পর্যায়ে এলপিজির দাম প্রতি কেজি
৭৫ টাকা ৪৯ পয়সা
ধরে ১২ কেজি সিলিন্ডারের
দাম মূসকসহ ৯০৬ টাকা। যা
এপ্রিল মাসে নির্ধারণ করা
হয়েছিল ৯৭৫ টাকা। তবে
সৌদি সিপির সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় ঠিক
রাখা হয় সরকারি পর্যায়ে
বিক্রি করা এলপিজির দাম।
সাড়ে ১২ কেজি সিলিন্ডারের
দাম আগের মতোই ৫৯১
টাকা বহাল থাকল।
এলপিজির পাইকারি দামের সঙ্গে সরকার নির্ধারিত মূল্যের মিল না থাকায় রাজধানীসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহরগুলোর বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীরা সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিলিন্ডার বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। রাজধানীর গেন্ডারিয়ার ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান খান জানান, সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে তা পাইকারি মূল্যের চেয়েও কম।
বাড্ডা লিংক
রোডের ব্যবসায়ী আমিরুল জামান জানান, ৯৫০ টাকা থেকে
১২০০ টাকা পর্যন্ত কোম্পানি
ভেদে সিলিন্ডার বিক্রি করছেন। তিনি জানান, পাইকারি
পর্যায়ে দাম বেশি দিতে
হচ্ছে তাই খুচরা পর্যায়ে
দাম বেড়ে যায়।
ঢাকার
বাইরে খুলনা সোনাডাঙ্গা এলাকার হামিদ এন্টারপ্রাইজের মালিক হোসাইন জালাল জানান, সরকার দাম নির্ধারণ করে
দিলেও বেসরকারি ব্যবসায়ীরা যে দাম নির্ধারণ
করে দেন সে দামেই
বিক্রি করতে হচ্ছে। এখানে
কোম্পানি ভেদে ১২ কেজির
সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ টাকা থেকে
১১৫০ টাকা দামে।
একই
চিত্র রাজশাহী খুলনা ও রংপুর বিভাগে।
চট্টগ্রামেও কোম্পানি ভেদে ৯৫০ টাকা
থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি
হচ্ছে এলপিজি। হালি শহরের কয়েকটি
দোকান থেকে পাওয়া তথ্য
অনুযায়ী, ১২ কেজির টোটাল
গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকা। বসুন্ধরা
ও ওমেরা ১০৫০ টাকা। সরকারি
পদ্মা, মেঘনা, যমুনাও বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৫০
টাকায়। ময়মনসিংহের গাঙ্গিনার মোড়ে কয়েকটি দোকানে
৯০০ থেকে ১৪০০ টাকা
পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে এলপিজি গ্যাস। অথচ প্রতি ১২
কেজি সিলিন্ডারের দাম হওয়া উচিত
ছিল ৯০৬ টাকা।
এ দিকে বাজারে দেখা গেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান পদ্মা, মেঘনা, যমুনা কোম্পানির গ্যাসের দামও বাড়তি। ঢাকায় এদের দেখা মিললেও বাইরে সরকারি কোম্পানির সিলিন্ডার ভোক্তাদের কাছে সোনার হরিণ। যেসব জায়গায় পাওয়া গেছে সেসব স্থানেও সিলিন্ডারপ্রতি ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দেখা গেছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন- বিপিসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিটি নিউজকে জানান, সরকারি সিলিন্ডারে মূল্য কম হওয়ায় চাহিদা বেশি। সে কারণে হয়তো বাজারে কম দেখা যায়। তবে দাম বাড়তি নেয়া হচ্ছে কি না তা মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি। এ দিকে মাঠপর্যায়ে এলপিজির দাম নির্ধারণ করতে উদ্যোগ নিচ্ছে জ্বালানি বিভাগ।
বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর
রহমান সিটি নিউজকে জানিয়েছেন,
চলমান করোনার কারণে উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই মাঠপর্যায়ে সরকার
নির্ধারিত এলপিজির মূল্য বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে।
উল্লেখ্য,
সৌদি আরবের দামের ভিত্তিতেই এলপিজির দাম সমন্বয় করা
হয়েছে। প্রোপেন ও বিউটেনের প্রতি
টন সৌদি সিপি গড়ে
৫৪০ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার
ধরে হিসাব করা হয়েছে। এর
সঙ্গে সম্পর্কিত মূসক ও ডলারের
বিপরীতে টাকার মান ধরে আনুপাতিক
হারে পরিবর্তন করা হয়েছে। এলপিজির
দাম সমন্বয় সংক্রান্ত গঠিত কমিটির প্রস্তাব
অনুযায়ী, বিইআরসি গত ২৮ এপ্রিল
শুনানি করে ২৯ এপ্রিল
দাম নির্ধারণ করা হয়। এর
আগে গত ১২ এপ্রিল
প্রথমবারের মতো দাম নির্ধারণ
করা হয়।
আরিয়ান/এম. জামান