প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২১, ০৫:০৩ পিএম
এক শ্রেণির অসাধু
ব্যবসায়ী সরকারি বন্ড সুবিধার আওতায়
শুল্কমুক্ত কাপড় আমদানি করে
চোরাই বাজারে বিক্রি করছে। এতে বছরে কয়েক
হাজার কোটি টাকার রাজস্ব
হারাচ্ছে সরকার। পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়ছে দেশীয়
শিল্প খাত। শুল্কমুক্ত কাপড়
আমদানি করে খোলাবাজারে বিক্রির
অভিযোগে এমন ১১ জনকে
গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
শনিবার
(৩১ জুলাই) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে
এসব জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম
হাফিজ আক্তার।
এর
আগে শুক্রবার (৩০ জুলাই) দিনগত
রাতে রাজধানীর নিউমার্কেট থানার এলিফ্যান্ট রোড ও তেজগাঁও
থানার সাতরাস্তার মোড় এলাকায় অভিযান
চালিয়ে এই চক্রের সদস্যদের
গ্রেফতার করে ডিবি লালবাগ
বিভাগ।
এ
সময় তাদের কাছ থেকে ৬টি
কাভার্ডভ্যান ভর্তি ৫০৮ রোল চোরাই
পর্দার কাপড় ও ১৮ হাজার
৭৫০ কেজি চোরাই কাপড়
জব্দ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত
এসব কাপড়ের বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ২৭
লাখ টাকা।
গ্রেফতাররা
হলেন- শাহাদাত হোসেন, সাইফুল ইসলাম জীবন, রুবেল আকন, মো. মাসুম,
মনির হোসেন, রবিন ওরফে হৃদয়
সরদার, শাহিন হাওলাদার, আরিফ হোসেন, সোহাগ
ফরাজী, মো. নাজিম ও
কামাল হোসেন।
সংবাদ
সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম
হাফিজ আক্তার বলেন, ‘গ্রেফতাররা বন্ড সুবিধায় বিদেশ
থেকে শুল্কমুক্ত কাপড় আমদানি করে। এসব কাপড়
অতিরিক্ত লাভের উদ্দেশ্যে সুবিধামতো সময়ে চোরাই পথে খোলাবাজারে বিক্রি
করতেন।’
তিনি
বলেন, ‘এ কাপড়গুলো চীন
থেকে চট্টগ্রামে আসে। এরপর ময়মনসিংহের
ভালুকায় যায়। সেখান থেকে
রাজধানীর সাতরাস্তা হয়ে এলিফ্যান্ট রোডে
যায়। সেখান থেকে সুবিধামতো সময়ে
তারা সেসব কাপড় খোলাবাজারে
বিক্রি করা হতো।’
ডিবি
প্রধান বলেন, ‘প্রতি বছর সরকার বন্ড
সুবিধার আওতায় ৭৩ হাজার কোটি
টাকা শুল্ক ফ্রি সুবিধা দিয়ে
থাকে। আইন অনুযায়ী বন্ডের
লাইসেন্সপ্রাপ্তরা এ সুবিধার আওতায়
বন্ডের পণ্য বিদেশে রফতানি
ছাড়া দেশের কোথাও বিক্রি করা যায় না।
যদিও কেউ বিক্রি করতে
চায় তবে বন্ড কমিশনারের
কাছে ২০ শতাংশ কমিশন
বাণিজ্য শুল্ক দিয়ে অনুমতি নিতে
পারে।’
কিন্তু
এ সঙ্ঘবদ্ধ চক্রটি দেশেই চোরাই পথে সেসব পণ্য
এনে খোলাবাজারে বিক্রি করে আসছিল উল্লেখ
করে তিনি আরও বলেন,
‘একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এ
অসদুপায়ে দেশে প্রায় ৮০
হাজার কোটি টাকা বন্ড
সুবিধার অপব্যবহারে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। পাশাপাশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোও লোকসান-হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। কারণ তারা উৎপাদিত
পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় না। দেশীয়
বাজারে ব্যবসা করা বস্ত্র খাত
হুমকির মুখে পড়ছে।’
হাফিজ
আক্তার বলেন, ‘আমরা ইসলামপুর-কেন্দ্রিক
এ রকম আরেকটি চক্রের
সন্ধান পেয়েছি। এ চক্রের পেছনে
কারা জড়িত তা খতিয়ে
দেখে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেয়া
হবে।’
যারা
রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বস্ত্র খাতকে
হুমকিকে ফেলছে; তাদেরও খুঁজে বের করা হবে
বলে তিনি জানান।
গ্রেফতারদের
বিরুদ্ধে নিউমার্কেট থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা
হয়েছে। ওই মামলায় তাদের
প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে
আদালতে পাঠানো হবে বলেও জানান
তিনি।
সম্রাট/নূর/এম. জামান