• ঢাকা শুক্রবার
    ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকামুখী মানুষের স্রোত, চোখে মুখে বেদনা!

প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২১, ১০:৪৩ এএম

ঢাকামুখী মানুষের স্রোত, চোখে মুখে বেদনা!

বিশেষ প্রতিনিধি

ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করে সরকার। এই সুযোগে ঈদের আগের দিন ২০ জুলাই পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকা ছাড়ে। এরই মধ্যে দেশজুড়ে উদযাপিত হলো ঈদুল আজহা। ঈদের ছুটি শেষে ২৩ জুলাই ভোর থেকে আবারও দুই সপ্তাহের কঠোর লকডাউন শুরু হতে যাচ্ছে। 

এমন অবস্থায় স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে না করতেই কর্মস্থলে ফিরতে হচ্ছে বিপুলসংখ্যক মানুষকে। অন্যদিকে সামনে টানা ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন থাকায় অনেকেই গ্রামে ফিরে যাচ্ছেন। 

তবে এবার ঢাকামুখী মানুষের স্রোতটাই বেশি। বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) ভোর থেকেই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুট দিয়ে শুরু হয়েছে ঢাকামুখী মানুষ পারাপারের ব্যস্ততা। 

সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ঘাট এলাকায় যানবাহন ও যাত্রীর সংখ্যাও বাড়ছে। অনেকের চোখে মুখে দেখা গেছে স্বজনদের রেখে আসার বেদনা। দৌলতদিয়া ঘাটে ঠিক তেমনি একজনের সঙ্গে কথা হয় সিটি নিউজ ঢাকার। তার নাম সোহাগ ফেরদৌস। তিনি খুলনা বাগেরহাট থেকে এসেছেন।

সোহাগ জানান, ‘রোজার ঈদেও বাড়ি যেতে পারলাম না। কোরবানির ঈদটা পরিবারের সঙ্গে করতে গেলাম; সেই আনন্দটাও ঠিকমতো ভাগাভাগি করতে পারলাম না। মা-বাবা দুজনই অসুস্থ, তাও মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে আবার ঢাকায় ফিরতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘অনেকদিন পর গিয়ে দুই দিনেই ফিরে আসা কষ্টদায়ক। বাড়িতে যেতে না যেতেই ফেরার সময় হয়ে যায়। তাই ঈদের আনন্দ থাকলেও কিছুটা খারাপও লাগছে ‘

এদিকে ঢাকাতেই ঈদ করেছেন রনজক রিজভী নামের এক ব্যক্তি। তবে ১৪ দিন কঠোর বিধিনিষেধ থাকায় বৃহস্পতিবার ভোরেই রওনা হয়েছেন গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে। 

তিনি বলেন, ‘একটি শপিংমলে চাকরি করি। ঈদ ঢাকাতেই করতে হয়েছে। শুক্রবার থেকে ১৪ দিনের লকডাউন থাকায় শপিংমল বন্ধ থাকবে। তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি।’ 

বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, ঢাকামুখী মানুষের চাপ সামলাতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ৩৩টি লঞ্চ ও ১৯টি ফেরি চালু রাখা হয়েছে।

ঘাট ব্যবস্থাপক মো. সালাম মিয়া জানান, ‘ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের চাপ যত বেশিই হোক বিআইডব্লিউটিসি প্রস্তত রয়েছে। ঈদে সেবা দেয়ার জন্য কাউকে ছুটি দেয়া হয়নি।’

দেশে উদ্বেগজনক হারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় গত ১ জুলাই থেকে শুরু হয় সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। পরে বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়িয়ে তা ১৪ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

এরপর ঈদুল আজহার কারণে ১৫ জুলাই থেকে লকডাউন শিথিল করা হয়। গত ১৩ জুলাই জারি করা এক প্রজ্ঞপনে লকডাউন শিথিলের এ নির্দেশনা দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ১৫ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত চলমান কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল থাকবে। জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদ-পূর্ববর্তী ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে এ সময়ে জনসাধারণকে সতর্ক থাকা, মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। একই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, করোনাভাইরাসজনিত সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ঈদের ছুটি শেষে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো। লকডাউনে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

টিআর/এএমকে

জাতীয় সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ