নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ে আতঙ্কিত গোটা বিশ্ব। ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। এরই মধ্যে দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে। তার মধ্যেই হাজির আরও একটি কোরবানির ঈদ। গত বছরের মতো এবারও বিধিনিষেধে আটকে গেছে মানুষের ঈদ আনন্দ।
আতঙ্ক নিয়েই এবারের ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। নামাজ শেষে মহান আল্লাহর দরবারে করোনা মহামারি থেকে মুক্তি চেয়েছেন তারা।
বুধবার (২১ জুলাই) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান ও প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টায়। পঞ্চম ও শেষ জামাত শেষে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি এবং অসুস্থদের সুস্থতার জন্য দোয়া করা হয়।
বায়তুল মোকাররমে ঈদুল আজহার প্রধান জামাতে অংশ নেয়া নূর ইসলাম বলেন, ‘বাবা-মা, ভাই-বোন সবাই চট্টগ্রামে গ্রামের বাড়িতে। করোনাভাইরাসের কারণে সবাইকে ফেলে ঢাকায় একা ঈদ করছি। এই ঈদ কীভাবে আনন্দের হয়? করোনা নিয়ে সবার মধ্যে নানা দুশ্চিন্তা ও অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। কখন কার চাকরি চলে যায়, কেউ বলতে পারে না। বাধ্য হয়ে ঢাকায় পড়ে আছি। কাল থেকেই বাবা-মায়ের জন্য মনটা খুব খারাপ। এই প্রথম বাবা-মাকে ছেড়ে আমার প্রথম ঈদ।’
সাগর হোসেন নামের আরেকজন বলেন, ‘ঈদের নামাজ আদায় করেছি, কোরবানি দিচ্ছি, কিন্তু করোনার আতঙ্ক মন থেকে যাচ্ছে না। নামাজ শেষে মোনাজাতে করোনা থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করা হয়েছে। এ বালা-মুসিবত আল্লাহতালা নিয়ে এসেছেন, তিনিই এ বালা-মুসিবত নিয়ে যাবেন। আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারে না, কবে আমরা এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাব।’
বাসাবোর সবুজকানন জামে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘নামাজ শেষে কোলাকুলি তো দূরের কথা নামাজ শেষে একজন আরেকজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করবেন সে দৃশ্যও খুব কম দেখা গেছে। অনেকে কোনোরকমে দুই রাকাত নামাজ পড়েই জায়নামাজ গুটিয়ে চলে গেছেন। তারা নামাজ শেষে মোনাজাত করেনি এবং খুৎবাও শোনেননি।’
একই মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, ‘মসজিদে গিয়ে ঈদের নামাজ আদায় করছি এবং কোরবানি দিচ্ছি। কিন্তু ঈদের প্রকৃত যে আনন্দ তা দুই বছর ধরে আর নেই। গত বছর দেশে করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই মানুষের মধ্য থেকে ঈদের প্রকৃত আনন্দ হারিয়ে গেছে।’
জেডআই/এএমকে
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন