প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২৫, ১১:২২ এএম
ইরানের সামরিক বাহিনীর সিনিয়র মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল শেকারচি বলেছেন, দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা প্রতিদিনই আরও উন্নত হচ্ছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমরা আজ যত শক্তিশালী, আগামীকাল তার চেয়েও বেশি শক্তিশালী হব।
মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম মেহর নিউজ এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেকারচি জানান, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী ধারাবাহিকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র শক্তি বৃদ্ধি করছে। তার ভাষায়, এই খাতে প্রতিদিনই ঊর্ধ্বমুখী অগ্রগতি হচ্ছে। গতকাল যে অবস্থানে ছিলাম, আজ আমরা তার চেয়ে শক্তিশালী, আর আগামীকাল আজকের চেয়েও শক্তিশালী হব।
তিনি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির ভিত্তি নির্মাণে প্রয়াত আইআরজিসি এয়ারোস্পেস ফোর্সের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান তেহরানি মোগাদ্দামের ভূমিকা তুলে ধরেন। শেকারচির মতে, তেহরানি মোগাদ্দামই এই শক্তির ভিত্তি স্থাপন করেন এবং যে প্ল্যাটফর্ম থেকে ইরান এই খাতে উত্থান ঘটিয়েছে, তা নির্মাণ করেন।
গত সপ্তাহে তেহরান আইআরজিসি বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান হাসানজাদেহ বলেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে’। ১২ দিনের যুদ্ধে শত্রুপক্ষ বড় ধরনের ভুল হিসাব করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার দাবি, এই যুদ্ধ ইরান, ইসলামি বিপ্লব ও ইসলামের জন্য সম্পূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ বিজয় এনে দিয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল এবং তাদের মিত্রদের জন্য রেখে গেছে তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী পরাজয়।
তিনি বলেন, শত্রুর ধারণা ছিল তারা ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র শক্তিকে উৎসে ধ্বংস করতে পারবে, মাঝপথে প্রতিহত করতে পারবে এবং দখলকৃত ভূখণ্ডে পৌঁছানো ক্ষেপণাস্ত্রও বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে—কিন্তু এসব হিসাব ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
১২ দিনের যুদ্ধ ও পাল্টা হামলা
১৩ জুন ইসরাইল কোনো উসকানি ছাড়াই ইরানের ওপর হামলা চালায়, যখন ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে পারমাণবিক আলোচনার প্রক্রিয়া চলছিল। ইসরাইলের ওই আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে ছড়িয়ে পড়া ১২ দিনের যুদ্ধে ইরানে অন্তত ১ হাজার ৬৫ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিকও ছিলেন।
যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রও অংশ নেয় এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করে। এর জবাবে ইরানি সশস্ত্র বাহিনী দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনা ও কাতারের আল-উদেইদ এয়ারবেস—যা পশ্চিম এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ঘাঁটি—লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
২৪ জুন ইরানের সফল পাল্টা হামলার পর ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য হয়।
সূত্র: মেহের নিউজ এজেন্সি