প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০২১, ০৫:৩১ পিএম
বিশ্বজুড়েই করোনাভাইরাস আতঙ্কে দিন কাটছে প্রতিটি
মানুষের। এরমধ্যে হাজির মুসলমানদের অনত্যম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা।
আর এই ঈদ সামনে
রেখে করোনার অতিমারির মধ্যেও বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
জুলাই
মাসের প্রথম ১৫ দিনে ১২৬
কোটি ৪২ লাখ মার্কিন
ডলার দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১০
হাজার ৭০০ কোটি টাকার
বেশি। রেমিট্যান্সের এ প্রবাহ অব্যাহত
থাকলে মাস শেষে রেকর্ড
পরিমাণ প্রবাসী আয় অর্জন করবে
বাংলাদেশ। সোমবার (১৯ জুলাই) বাংলাদেশ
ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা
গেছে।
ব্যাংক
কর্মকর্তারা বলছেন, সামনে ঈদুল আজহার কারণে
রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসী
বাংলাদেশিরা দেশে বসবাসরত তাদের
পরিবার-পরিজনের কাছে বাড়তি অর্থ
পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া সরকারের
নগদ ২ শতাংশ প্রণোদনা
ও করোনায় বিদেশ ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণের কারণে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত থেকে বৈধ
চ্যানেলে রেমিট্যান্স বেশি আসছে। পাশাপাশি
মহামারিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তার
কারণে প্রবাসীরা জমানো টাকা দেশে পাঠিয়ে
দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স
প্রবাহ বাড়ছে।
কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি
জুলাই মাসের প্রথম ১৫ দিনে সবচেয়ে
বেশি রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়
এসেছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে এসেছে ৩৮ কোটি ৭৮
লাখ ডলার। এরপর ডাচ-বাংলা
ব্যাংক ১৬ কোটি ৯২
লাখ, অগ্রণী ব্যাংক ১৩ কোটি ৭৬
লাখ ও সোনালী ব্যাংক
এনেছে ৭ কোটি ৬৪
লাখ ডলার।
গত
জুন মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা
১৯৪ কোটি মার্কিন ডলার
রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। ফলে
সদ্য সমাপ্ত ২০২০-২১ অর্থবছরে
দেশে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৭৭
কোটি ৭৭
লাখ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায়
দুই লাখ ১০ হাজার
৬১০ কোটি টাকার বেশি।
এটি আগের অর্থবছরের চেয়ে
৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।
এর আগে কোনো অর্থবছরে
এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি বাংলাদেশে।
কেন্দ্রীয়
ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক
হাজার ৮২০ কোটি ডলার
বা ১৮ দশমিক ২
বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন
প্রবাসীরা। অর্থবছর হিসাবে ওই অংক ছিল
এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে
সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। তারও আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে
রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড হয়। ওই সময়
এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার
রেমিট্যান্স দেশে আসে।
এদিকে
রেমিট্যান্সের প্রবাহ চাঙ্গা থাকায় ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। জুন মাস শেষে
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ৪২
বিলিয়ন ডলার বা প্রায়
চার হাজার ৬৪২ কোটি ডলার,
প্রতি মাসে ৪ বিলিয়ন
ডলার আমদানি ব্যয় হিসেবে মজুদ
এ বৈদেশিক মুদ্রা দিয়ে সাড়ে ১১
মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।
২০১৯
সালের ১ জুলাই থেকে
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে
প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০
টাকা দেশে পাঠালে তার
সঙ্গে আরও ২ টাকা
যোগ করে মোট ১০২
টাকা পাচ্ছেন সুবিধাভোগী। এ ছাড়া ঈদ
ও উৎসবে বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের
সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি এক শতাংশ দেয়ার
অফার দিচ্ছে। এতে করে বৈধ
চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন প্রবাসীরা।
জেডআই/নির্জন