• ঢাকা শনিবার
    ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বেলুনে করে উত্তর কোরিয়ায় কোভিড পাঠিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া!

প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২২, ০১:০৮ এএম

বেলুনে করে উত্তর কোরিয়ায় কোভিড পাঠিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কোভিডে বিপর্যস্ত উত্তর কোরিয়া। দীর্ঘ দুই বছর কোভিডমুক্ত থাকার পর এ বছর কোভিড ছড়াতে শুরু করেছে চীনের প্রতিবেশি দেশটিতে। যদিও পরীক্ষার সুযোগ কম থাকায় আসল অবস্থা বুঝা যাচ্ছে না। তবে এরইমধ্যে দেশটির তোড়জোড় এবং অজানা জ্বরের ছড়াছড়িতে এটি স্পষ্ট, সমগ্র দেশটিতেই মহামারি ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু বিশ্ব থেকে একরকম বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়ায় কোভিড ঢুকলো কীভাবে? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে মরছে দেশটি নিজেও। অবশেষে তারা একটি ‘থিওরি’ দাঁড় করিয়েছে এ নিয়ে। দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, মূলত দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে তাদের সীমান্তের কাছে এসে পড়া ‘অজানা বস্তু’ থেকেই কোভিড ছড়িয়েছে। একইসঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে সীমান্ত দিয়ে উড়ে আসা বস্তু সম্পর্কে নাগরিকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। 

বিবিসির খবরে জানানো হয়, বহু বছর ধরেই দক্ষিণ কোরিয়ার অধিকার কর্মীরা বেলুনে করে সীমান্তের অপর পাড়ে বই, প্রচারপত্র এবং মানবিক সাহায্য পাঠিয়ে আসছে। উত্তর কোরিয়ার দাবি একইরকম উপায়ে উত্তর কোরিয়ায় কোভিডও পাঠানো হয়েছে। এই দাবির প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়া বলেছে, এই ভাবে কোভিড ভাইরাসের সীমান্ত পার হয়ে সেখানে যাওয়া ‘একেবারেই অসম্ভব’।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে, সরকারি তদন্তে বের হয়ে এসেছে যে, এই ভাইরাস যখন ছড়াতে শুরু করে তখন প্রথম দিকে দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে সীমান্ত এলাকায় অজ্ঞাত কিছু বস্তুর সংস্পর্শে আসার পর দুই ব্যক্তি কোভিড আক্রান্ত হন। এপ্রিল মাসের গোড়ায় ইফো-রি পাহাড়ে এসে পড়া অজ্ঞাত কিছু বস্তু খুঁজে পাবার পর ১৮ বছর বয়সী একজন সৈনিক এবং তার পাঁচ বছরের সন্তান কোভিড পজিটিভ শনাক্ত হয়। এরপর থেকে প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ ভাইরাস উত্তর কোরিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

এই তদন্তের ফলে উত্তর কোরিয়ার জনগণকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তারা যেন দুই কোরিয়ার মধ্যে চিহ্ণিত সীমানায় এবং সীমান্তবর্তী এলাকায় বেলুনে পাঠানো, কিংবা বাতাস ভেসে আসা বা আবহাওয়া মণ্ডলের কোন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে পাঠানো অজানা বস্তু সম্পর্কে সজাগ থাকে এবং সেগুলো ধরাছোঁয়ার ব্যাপারে সতর্ক হয়। দেশের জনগণকে আরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে কেউ রহস্যজনক কিছু দেখলেই যেন অবিলম্বে কর্তৃপক্ষকে জানায়, যাতে জরুরিকালীন মহামারি দমন বাহিনীর সদস্যরা সেগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলতে পারে।

গত এপ্রিলের শেষ থেকে উত্তর কোরিয়ায় প্রায় ৪৭ লাখ মানুষের জ্বর হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এরা সবাই কোভিড আক্রান্ত। মে মাসে কোভিডের মহামারি শুরু হওয়ার ঘটনাকে দেশের ইতিহাসের সবথেকে বড় সংকট বলে আখ্যায়িত করেছেন দেশটির ওয়ার্কার্স পার্টির প্রধান কিম জং উন। এ বছরের গোড়ার দিক পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন এই দেশটির দাবি ছিল উত্তর কোরিয়া সম্পূর্ণ কোভিডমুক্ত দেশ। 

আড়াই কোটি জনসংখ্যার এই দেশে টিকাদান কর্মসূচির অভাব রয়েছে, দেশটির স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাও অনুন্নত। যদিও সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে সংবাদ মাধ্যমের খবর থেকে জানা যাচ্ছে যে চীন তাদের তৈরি টিকা উত্তর কোরিয়াকে দেবার যে প্রস্তাব করেছে পিয়ংইয়ং তা গ্রহণ করেছে। তবে দেশটিতে কত মানুষকে এ পর্যন্ত টিকা দেয়া হয়েছে বা আদৌ কাউকে টিকা দেয়া হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।

এসএ/
আর্কাইভ