• ঢাকা শনিবার
    ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন করে সৌদি-তুরস্ক সম্পর্ক: আলজাজিরার বিশ্লেষণ

প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২২, ১১:১৪ এএম

নতুন করে সৌদি-তুরস্ক সম্পর্ক: আলজাজিরার বিশ্লেষণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক


বহু বছর পর তুরস্কে পা রেখেছেন সৌদি আরবের সিংহাসনের উত্তরসূরি মোহাম্মদ বিন সালমান। এ সময়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। দুদেশের সম্পর্ক পরিপূর্ণ স্বাভাবিক করতেই যুবরাজের এই সফর বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে নির্মমভাবে হত্যার শিকার হন মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগি। এ ঘটনায় তুরস্কের সঙ্গে সৌদি সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটেছে।-খবর আলজাজিরার

জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আংকারায় প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে মোহাম্মদ বিন সালমানকে স্বাগত জানান এরদোগান। এ সময়ে তারা পরস্পরকে করমর্দন ও আলিঙ্কন করেন। পরে তুরস্কের মন্ত্রিসভার সঙ্গে বৈঠক করেন যুবরাজ।

আলোচনার পর বিবৃতিতে দুইদেশ জানিয়েছে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সহযোগিতার নতুন এক যুগের পথ দেখাবে মোহাম্মদ বিন সালমানের এই সফর।

এর আগে চলতি সপ্তাহে জর্ডান ও মিসরেও সফর করেন পশ্চিমা বিশ্বে এমবিএস নামে খ্যাত যুবরাজ। দেশে ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সমালোচকদের সুর নরম করতে সৌদির বিপুল সম্পদ ও তেলকে ট্রাম্পকার্ড হিসেবে ব্যবহার করছেন তিনি।

এদিকে তুরস্কের অর্থনৈতিক অবস্থা ধীরে ধীরে তলানিতে চলে যাচ্ছে। এরইমধ্যে ২০২৩ সালে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ও অর্থনেতিক সংকট লাঘবে সৌদির কাছে সহায়তা চাচ্ছে এরদোগান সরকার।

তুরস্কের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, এমবিএসের এই সফরের মধ্য দিয়ে দুদেশের সম্পর্ক পরিপূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সৌদি-তুরস্কের টানাপোড়েন থাকবে না, তারা আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, বাণিজ্য, ফ্লাইট ও টেলিভিশন ধারাবাহিকের ওপর থেকে দুদেশেই বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে। এছাড়া পরস্পরের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের প্রচারও স্থগিত করা হয়েছে। আলোচনায় মুদ্রা লেনদেনের বিষয়টি থাকলেও তা প্রত্যাশামতো হবে বলে মনে হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে এরদোগান ও যুবরাজের মধ্যে একান্ত আলাপ হবে।

তাদের মধ্যে আলোচনা সফল হলে তুরস্কের বিদেশি মুদ্রার মজুত বৃদ্ধিতে তা সহায়ক হবে। এছাড়া প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও পর্যটন নিয়েও তাদের মধ্যে কথা হবে।

এক বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্কের স্টার্টআপ খাতে সৌদি আরবের বিনিয়োগের আহ্বান করা হয়েছে। তুরস্কের মুদ্রা লিরার মান পড়ে যাওয়ায় নাজুক হয়ে গেছে দেশটির অর্থনীতি। এতে সেখানে ৭০ শতাংশের বেশি মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সৌদি তহবিল ও বিদেশি মুদ্রা জনসমর্থন ধরে রাখতে এরদোগানকে সহায়তা করবে। আলোচনায় সৌদির কাছে তুরস্কের সশস্ত্র ড্রোন বিক্রির বিষয়টিও থাকবে।

খাসোগিকে হত্যার পর তুরস্কের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক তলানিতে চলে যায়। সৌদি সরকারের উচ্চ-পর্যায় থেকে এই হত্যার নির্দেশ এসেছে বলে তখন অভিযোগ করেন এরদোগান। তবে এ সাংবাদিককে হত্যায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন এমবিএস।

সম্পর্কোন্নয়নে কয়েক মাসের চেষ্টার পর গেল এপ্রিলে খাসোগি হত্যার বিচার স্থগিত করে তুরস্কের আদালত। এমনকি বিচারের নথিপত্র রিয়াদের কাছে পাঠাতেও অনুমোদন দেয় এরদোগান সরকার। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা। তাদের মতে, সৌদির কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করা যায় না।

সোমবার সন্ধ্যায় যুবরাজকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছেন মিসরীয় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি। এ সময়ে তাদের মধ্যে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ