• ঢাকা শুক্রবার
    ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

২১ বছর পর পরিবার খুঁজে পেলেন ইয়াসমিন

প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২২, ০৯:০৪ পিএম

২১ বছর পর পরিবার খুঁজে পেলেন ইয়াসমিন

ময়মনসিংহ ব্যুরো

সংসারে অভাব-অনটনের কারণে ৯ বছর বয়সে ২০০০ সালের কোনো এক সময় ময়মনসিংহ নগরীর বাঘমারা এলাকায় এক ফুফুর বাসায় কাজে যায় ইয়াসমিন আক্তার।

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের জুগিয়াখালি গ্রামের কৃষক আব্দুল হেকিম ও মনোয়ারা বেগম দম্পতির মেয়ে ইয়াসমিন।

সেখানে কোনো একটি ঘটনায় ইয়াসমিনকে মারধর করেন তার ফুফু। এতে অভিমান করে বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেন ইয়াসমিন। এরপর তার আর বাসায় ফেরা হয়নি।

এরপর নানা ঘটনাচক্রে এখানে-ওখানে বিভিন্ন জনের বাসায় কাজ করে বড় হয় ইয়াসমিন। এরই মাঝে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেম ও বিয়ে করে স্বামীকে নিয়ে নতুন স্বপ্নে সংসার শুরু করেন তিনি। তাদের দাম্পত্য জীবনে বর্তমানে ১১ বছরের একটি মেয়ে ও সাত বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কিন্তু জীবন সংগ্রামে পথহারা ইয়াসমিনের এই সুখ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। বছরখানেক আগে স্বামী ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এতে নতুন করে ইয়াসমিনের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। এখন দুই সন্তান নিয়ে ছোট একটি চাকরি করে কোনোভাবে বেঁচে আছেন তিনি। 

অতঃপর বিভিন্ন জনের কাছ থেকে জানতে পেরে হারিয়ে ফেলা মা-বাবার সন্ধানে সে দ্বারস্থ হয় আরজে কিবরিয়ার উপস্থাপনায় স্টুডিও অব ক্রিয়েটিভ আর্টস লিমিটেডের ‘আপন ঠিকানা’ অনুষ্ঠানের।

এরপর ইয়াসমিনকে নিয়ে ‘আপন ঠিকানা’ অনুষ্ঠানে গত ১০ মে একটি প্রতিবেদনের বেসিক ভিডিও প্রচার হলে তিন ঘণ্টার মাথায় প্রাথমিকভাবে তার পরিবারের সন্ধান নিশ্চিত করে আপন ঠিকানা টিম। এরপর গত ১৬ মে ধারণ করা হয় ইয়াসমিনের আপডেট পর্ব।

সেখানে এসেই আপন ঠিকানা স্টুডিওতে পরিবারের বড় ভাইয়ের রমজান মিয়ার সঙ্গে র্দীঘ ২১ বছর পর দেখা হয় ইয়াসমিনের। এতে প্রথমে তিনি আবেগ-আপ্লুত হয়ে পড়লেও বড় ভাইয়ের কাছ থেকে বাবা-মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন ইয়াসমিন।

রবিবার (২২ মে) রাতে আরজে কিবরিয়ার ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে প্রচারিত ১৮৯ নম্বর পর্বের এই আপডেট ভিডিও থেকে জানা যায় এ তথ্য।   

ইয়াসমিনের বড় ভাই রমজান মিয়া বলেন, ‘আমরা চার ভাই-বোনের মধ্যে ইয়াসমিন তৃতীয়। সে হারিয়ে যাওয়ার পর নানাভাবে তাকে আমরা খুঁজেছি, থানায় জিডিও করেছি। কিন্তু তাকে আমরা পায়নি। তার জন্য আমাদের মা কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে মারা গেছেন মা। বাবাও দেখে যেতে পারলেন না আজকের এই দিনটা। বাবা-মা আজকে থাকলে কতই না খুশি হতেন।

 

এএমকে

আর্কাইভ