• ঢাকা শনিবার
    ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পঞ্চগড় মুক্ত দিবস পালিত

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২১, ১১:২৮ পিএম

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পঞ্চগড় মুক্ত দিবস পালিত

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম যে কয়েকটি এলাকা মুক্ত হয় তার অন্যতম হলো পঞ্চগড়। ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর পঞ্চগড় মুক্ত হয়। দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা কমান্ড যৌথভাবে দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালিত হয়। এর মধ্যে ছিল পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া অনুষ্ঠান, আনন্দ শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা।

সকালে সার্কিট হাউজ চত্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া অনুষ্ঠান করা হয়। সেখান থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া অনুষ্ঠান করা হয়। সেখান থেকে জেলা পরিষদের সামনে ’৭১-এর বদ্ধভূমি স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বদ্ধভূমি স্মৃতিস্তম্ভে পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা পরিষদ, জেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন, জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন অফিসের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর একটি একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি শহর প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ মিনার চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালিতে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় পঞ্চগড়-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মজাহারুল হক প্রধান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, পঞ্চগড় পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সায়খুল ইসলাম, মো. আলাউদ্দিন প্রধান, আব্বাস আলী, এটিএম সারোয়ার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাদ জাহান সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন।


সভা শেষে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়। সভায় মুক্তিযোদ্ধারা তাদের বিভিন্ন স্মৃতি রোমন্থন করেন। আলোচনা সভায় জেলাপর্যায়ের সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারবর্গসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধারা জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম যে কয়েকটি এলাকা মুক্ত হয় তার অন্যতম হলো পঞ্চগড়। ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর পঞ্চগড় মুক্ত হয়। সেদিন উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।

১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত পঞ্চগড় থাকে মুক্ত। অবশেষে পাক হানাদারবাহিনী সড়কপথে পঞ্চগড়ের দিকে অগ্রসর হয় এবং ১৭ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা পঞ্চগড় দখল করে নেয়। দীর্ঘ সাত মাস যুদ্ধ চলার পর মুক্তি ও মিত্রবাহিনী পর্যায়ক্রমে পাক হানাদার বাহিনীর ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালিয়ে ২০ নভেম্বর অমরখানা, ২৫ নভেম্বর জগদলহাট, ২৬ নভেম্বর শিংপাড়া, ২৭ নভেম্বর তালমা, ২৮ নভেম্বর পঞ্চগড় সিও অফিস এবং ওই একই দিনে আটোয়ারী ও মির্জাপুর মুক্ত করে। মুক্তিযোদ্ধারা চার দিক থেকে পাক হানাদার বাহিনীর ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ করে। এই আক্রমণের ফলে অবশেষে ২৯ নভেম্বর পঞ্চগড় মুক্ত হয়। মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর ট্যাংক ও পদাতিক বাহিনীর সাঁড়াশি আক্রমণে পাক হানাদার বাহিনী পরাজিত হয়ে পঞ্চগড় এলাকা ত্যাগ করে। এভাবেই এসে যায় ২৯ নভেম্বর।

এস/এম. জামান

আর্কাইভ