প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২১, ০২:৪৩ এএম
করোনাকালে বিশ্বজুড়ে একটি বিষয় অবহেলিত
থেকে যাচ্ছে তা হলো শিশু-কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি। এ ব্যাপারে এখনই
যদি কোনো পদক্ষেপ না
নেওয়া হয়, তাহলে শিশুরা
এ জাতির জন্য ভবিষ্যতে অনেক
বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে
পারে।
মানসিক
সুস্বাস্থ্য ছাড়া স্বাস্থ্য পূর্ণতা
পায় না। ইউনিসেফের তথ্য
মতে, সারা বিশ্বে প্রায়
২২০ কোটিরও বেশি হচ্ছে শিশু,
যা মোট জনসংখ্যার প্রায়
২৮ শতাংশ। করোনা মহামারির কারণে স্কুল-কলেজ দীর্ঘদিন বন্ধ
থাকার ফলে তাদের মাঝে
দুশ্চিন্তা, অস্থিরতা এবং বিষণ্নতাসহ নানা
ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
শিশুদের
নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক
সংস্থা সেইভ দ্য চিলড্রেন
করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর
৪৬টি দেশের ১৩২৭৭ জন শিশু এবং
৩১৪৮৩ জন শিশুর অভিভাবকের
ওপর একটি গবেষণা পরিচালনা
করে। গবেষণাতে শিশু-কিশোরদের মানসিক
স্বাস্থ্যের ওপর আশঙ্কাজনক ফলাফল
বের হয়ে আসে-
* ৩২
শতাংশ শিশু নিজ ঘরে
পারিবারিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়।
* ৮৩ শতাংশ শিশুর মাঝে অবসাদ, বিষণ্নতা এবং বিভিন্ন নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হয় এবং মাত্র ৪৬ শতাংশ পিতামাতা এবং অভিভাবক এ বিষয়গুলো খেয়াল করেন।
* যেসব
শিশু তাদের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল তাদের মাঝে
অধিক দুশ্চিন্তা এবং অসুখী মনোভাব
তৈরি হয়। যেসব শিশুর
স্কুল ১-৪ সপ্তাহ
বন্ধ ছিল, তাদের ৬২
শতাংশের মাঝে নেতিবাচক মনোভাব
তৈরি হয়। পাশাপাশি যাদের
স্কুল ১৭-১৯ সপ্তাহ
বন্ধ ছিল, তাদের মাঝে
এ হার ছিল আরও
ভয়াবহ (৯৬ শতাংশ)।
বাংলাদেশে ১ বছরেরও বেশি
সময় ধরে স্কুল বন্ধ
থাকায় মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ভয়াবহ প্রভাব
পড়া স্বাভাবিক।
এর
পাশাপাশি যেসব শিশুর অতিরিক্ত
যত্নের প্রয়োজন তারা আরও বেশি
মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। যেমন- ওসিডি, অটিজম, সেরেব্রাল পালসিসহ এ ধরনের অন্যান্য
সমস্যায় ভুগতে থাকা শিশুরা এক
দুর্বিষহ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। যদিও
এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে অনেক দেশ পদক্ষেপ
গ্রহণ শুরু করেছে, তবু
এখনও অনেক পদক্ষেপ নেওয়ার
প্রয়োজন।
* টিকাদান
কর্মসূচির মতো মানসিক সুস্বাস্থ্য
কর্মসূচি চালু করা দরকার
যেখানে সরকারি, বেসরকারি সব স্তরের অংশগ্রহণ
এবং অবদান থাকবে।
* সব
স্বাস্থ্যকর্মীদের অবশ্যই মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশিক্ষণ থাকা
লাগবে।
* শিশুদের
এবং তাদের পিতামাতাদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতির লক্ষ্যে নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং সভা করতে
হবে।
* যেকোনো
শিশু যে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত
হয়ে পড়েছে তাকে অতি সত্বর
চিহ্নিত করে চিকিৎসকের কাছে
পাঠাতে হবে।
তারিক/এম. জামান