প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২১, ০৬:৩৫ পিএম
ব্যতিক্রম
আয়োজন। নারীরাই সব কিছুর আয়োজক। ভাতের চাল থেকে এক মুষ্টি করে চাল জমিয়ে পূজার
আয়োজন করেছেন নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের হাড়িপাড়ার নারীরা।
এ গ্রামের
পুরুষদের আয়ের উৎস বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢোল বাজানো আর মহিলারা বাড়িতে বসে বাঁশের
সামগ্রী তৈরি করা। দুর্গাপূজায় ঢোল বাজাতে গিয়ে পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে হাড়িপাড়া। তাই
নারীরা এমন কৌশলে আয়োজন করেন দুর্গাপূজার।
গ্রামবাসীরা
জানায়, গ্রামটিতে ২৮ পরিবারের বসবাস। নানা অনুষ্ঠানে ঢোল বাজানো ও বাঁশের
তৈরি সামগ্রী হাটবাজারে বিক্রির অর্থ দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করেন তারা। বিশেষ করে
দুর্গাপূজায় ঢোল বাজাতে গিয়ে পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে হাড়িপাড়া। তাই এ পাড়ার মহিলারা ১৫ বছর ধরে মুষ্টির চাল জমিয়ে ও সরকারের অনুদানে প্রাপ্ত চাল দিয়ে পূজার
কার্যাদি সম্পন্ন করে।
গ্রামের গৃহবধূ মল্লিকা রানী জানান, বিগত বছরগুলোতে অর্থাভাবে সাউন্ড সিস্টেমের
ব্যবস্থা থাকে না। আলোকসজ্জা, সামিয়ানা দিয়ে সাজানো হয় না মণ্ডপ। ফলে
এ পাড়ার বধূ, শিশু-কিশোররা দুর্গাপূজার আনন্দ থেকে বঞ্চিত
হন। তবে এবারে আয়োজক কমিটি এসবের ব্যবস্থা করায় পূজার পরিবেশ পেয়েছি।
হাড়িপাড়া পূজা
উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক গীতা রানী জানান, প্রায় ৬০ হাজার
টাকা ব্যয়ে এবারে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সরকারের অনুদানের চাল বিক্রি করে ১৪
হাজার টাকা পেয়েছি। বাকি টাকা মুষ্টির চাল বিক্রি করে ও বিভিন্ন বিশিষ্টজনের দেয়া
অর্থ দিয়ে সমন্বয় করা হয়। টাকার ঘাটতি হলে আবারও মুষ্টির চাল জমিয়ে দিয়ে তা পূরণ
করা হয়।
পূজা কমিটির
সভাপতি দিপালী রানী জানান, অর্থাভাবে পুরনো মণ্ডপ ঘরটি মেরামত করা
হয়নি। টিনের চালের ফুটো দিয়ে আকাশ দেখা যায়। বৃষ্টিতে মণ্ডপ ঘরের প্রতিমা নষ্ট হয়ে
যায়। এবারে সাউন্ড সিস্টেম আর বাহারি তোরণ নির্মাণ করায় ঘাটতি মোটা অঙ্কের অর্থের
ঘাটতি হবে।
নীলফামারী জেলা
পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট অক্ষয় কুমার রায় জানান, বিষয়টি
আমি অবগত ছিলাম না। মণ্ডপ ঘরটি সংস্কারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের
উদ্যোগ নেয়া হবে। এ ছাড়া আগামীতে নির্বিঘ্নে পূজা আয়োজনের জন্য ওই মণ্ডপে অনুদানের
অর্থ বৃদ্ধির সুপারিশ করা হবে।
উল্লেখ্য যে,
এবারে
জেলায় ৭৬৪টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পূজা মণ্ডপগুলোতে পুলিশের টহল টিম
সার্বক্ষণিক তদারকি করছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শনার্থীদের পূজামণ্ডপে আসার জন্য
পূজা উদযাপন কমিটির পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ কাজ করছে।
এস/এম. জামান