প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১, ০৭:৪৫ পিএম
নিজের জমি নেই এক শতাংশও। ছিল উদ্যম, ছিল সাহস। সরকারি জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন ফল ও মাছের চাষ। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে তিনি প্রায় ২৩ বিঘা জমির ওপর গড়ে তুলেছেন ড্রাগনের বাগান। বলছি নাটোরের মো. আলফাজুল আলমের কথা। বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষে সফলতা পেয়েছেন তিনি।
বর্তমানে তার
বাগানে চারাসহ প্রায় ৫০ হাজার ড্রাগন ফলের গাছ রয়েছে। এক বিঘা জমিতে তিনি ৪০০
ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষে খরচ হয়েছে ৬০-৭০
হাজার টাকা। তিনি প্রতিটি গাছ থেকে বছরে ৭-৮ বার ফল পেয়ে থাকেন। ফুল থেকে ফল
পরিপক্ব হতে ২০-২৫ দিন সময় লাগে। একটি পরিপূর্ণ ড্রাগন গাছ বছরে প্রায় ৫০-৬০ কেজি
ফল দিতে পারে। প্রতি কেজি ড্রাগন ফল তিনি বিক্রি করেন ২০০-২৫০ টাকায়।
সব মিলে আলফাজুল আলমের এ বাগান তৈরি করতে খরচ হয়েছে ১৭-১৮ লাখ টাকা। বর্তমানে এই ড্রাগন বাগানে ২০-২৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এসব শ্রমিকের মধ্যে তিন ভাগের এক ভাগ নারী এবং বেশ ক’জন প্রতিবন্ধী শ্রমিকও রয়েছেন। প্রতিদিন বাগান থেকে ব্যবসায়ীরা ড্রাগন ফল কিনে নিয়ে যান। তিনি আশা করছেন, এ বাগান থেকে বছরে প্রায় দু-তিন লাখ টাকা আয় করতে পারবেন। তার এ বাগানে প্রকারভেদে লাল, গোলাপি ও সাদা রঙের ড্রাগন ফল রয়েছে। তার এই বাগান দেখতে প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছেন।
আলফাজুল আলমের
বাগান দেখে নতুন বাগান তৈরিতে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে। এ ছাড়াও তিনি বাগানসহ ড্রাগন
ফলের চারার একটি নার্সারিও গড়ে তুলেছেন আলফাজুল। যেখান থেকে তিনি দেশের বিভিন্ন
জেলায় প্রায় এক লাখ ড্রাগন চারা বিক্রি করেছেন।
তার সাফল্যের
কথা জানতে চাইলে আলফাজুল আলম সিটি নিউজকে বলেন, ‘হাতে-কলমে বা
পুঁথিগত প্রশিক্ষণ আমার নেই। বিভিন্ন চাষির সঙ্গে কথা বলে উদ্বুদ্ধ হয়ে সরকারি
দফতরে কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে আমি নিজে ও শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করিয়েছি। আজ
বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল চাষ করে আমি সাফল্য পেয়েছি। ভবিষ্যতে বিশাল পরিসরে
ড্রাগনের বাগান করব। এ ফল চাষে এক দিকে যেমন দেশের ফলের চাহিদা পূরণ হবে। দেশে
কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।’
তিনি আরও বলেন,
‘এ
ড্রাগন ফলে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে। ডায়াবেটিসসহ নানা রোগ প্রতিরোধে কাজ করে।
আলফাজুল আলমের এ
ড্রাগন ফল বাগান ছাড়াও আপেল কুল, থাইকুল, বাওকুল, থাই
পেয়ারা, কাজী পেয়ারা, এলাচি লেবু,
কলম্ব
লেবু, চায়না লেবু, বেদানা ফলসহ নানা ধরনের দেশি-বিদেশি ফল
বাণিজ্যিকভাবে তিনি চাষ করছেন।
সবুজ/এম. জামান