প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২১, ০২:১৪ পিএম
কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনলাইনভিত্তিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান (ই-কমার্স) ইভ্যালি,
ই-অরেঞ্জসহ ১০টি ই-কমার্স
প্রতিষ্ঠানে নিরীক্ষক নিয়োগ দিয়ে আলাদা নিরীক্ষা
করার পরামর্শ দিয়েছে। রোববার (১২
সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এ চিঠি
দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নিরীক্ষা
করতে চাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো
হলো- ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, আলেশা মার্ট, ধামাকা, সিরাজগঞ্জ শপ, আলাদিনের প্রদীপ,
কিউকম, বুম বুম, আদিয়ান
মার্ট ও নিড ডটকম
ডটবিডি।
এর
আগে ইভ্যালি ছাড়া অন্য ৯
প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক লেনদেন ও আর্থিক তথ্য
জানতে চেয়ে গত ২৪
আগস্ট কেন্দ্রীয় ব্যাংককে চিঠি পাঠিয়েছিল বাণিজ্য
মন্ত্রণালয়। ওই চিঠির
পরিপ্রেক্ষিতে গত
১২ সেপ্টেম্বর (রোববার)
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়ে চিঠি
দিয়েছে কেন্দ্রীয়
ব্যাংক।
অন্যদিকে
ইভ্যালি তিন দফায় তাদের
সম্পত্তি, দায়-দেনা ইত্যাদির
বিবরণ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। এগুলোর
সত্যতা যাচাই ও পরবর্তী সিদ্ধান্ত
নিতে মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বৈঠক
বসছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য
মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে বলা
হয়েছে, ১০ ই-কমার্স
প্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ আর্থিক অবস্থা, ক্রেতা ও মার্চেন্টদের কাছে
মোট দায়ের পরিমাণ এবং চলতি ও
স্থায়ী মূলধনের পরিমাণ জানা দরকার।
এদিকে
বেশ কিছু ই-কমার্স
প্রতিষ্ঠান ব্যবসায় নতুন কৌশল অবলম্বন
করছে। নতুন এই ব্যবসা
পদ্ধতিতে অনলাইন বাজারগুলো ক্রেতাদের কাছ থেকে কয়েক
মাসের অগ্রিম টাকা সংগ্রহ করে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলো
পণ্য সরবরাহ করতে আরও বেশি
সময় নিয়ে থাকে।
এছাড়া,
প্রায়ই তারা ক্রেতাদের জানিয়ে
দেয়, তাদের অর্ডার করা পণ্যগুলো শেষ
হয়ে গেছে। আর তাই সেটা
পাঠানো সম্ভব নয়। তবে মাসের
পর মাস ধরে অপেক্ষার
পরেও প্রতিষ্ঠানগুলো পণ্য পৌঁছাতে ব্যর্থ
হলে ক্রেতারা তাদের টাকা ফেরত পান
না বলে অসংখ্য অভিযোগ
রয়েছে। অনলাইন ক্রেতাদের লোভনীয় সব ছাড়ের ফাঁদে
ফেলে দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর
বিশাল অঙ্কের অর্থ সংগ্রহ করার
বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন সরকার।
অনিয়ন্ত্রিত
এসব ই-কমার্স সাইটের
মাধ্যমে উচ্চ লেনদেনের বিষয়ে
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। তারা জানিয়েছে, ক্রেতাদের
কাছ থেকে সংগৃহীত অগ্রিম
অর্থের বিপরীতে এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো
সম্পদ নেই।
এর
আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরই এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে
বাংলাদেশ ব্যাংক গত জুন মাসে
ইভ্যালির ওপর একটি প্রতিবেদন
তৈরি করে। এতে উঠে
আসে, ইভ্যালির চলতি সম্পদের পরিমাণ
৬৫ কোটি ১৭ লাখ
টাকা। এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটির
দেনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪০৩ কোটি ৮০
লাখ টাকা। সম্পদের চেয়ে ৬ গুণের
বেশি এই দেনা পরিশোধের
সক্ষমতা নেই কোম্পানিটির।
এদিকে
অগ্রিম টাকা নিয়েও পণ্য
সরবরাহ বা অর্থ ফেরত
না দেওয়ায় গত মাসে ই-অরেঞ্জের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে ১ হাজার ১০০
কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে
মামলা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে ই-অরেঞ্জের মালিক
সোনিয়া মেহজাবিন ও তার স্বামী
মাসুকুর রহমান এবং প্রধান পরিচালন
কর্মকর্তা (সিওও) আমানউল্লাহ চৌধুরী গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
শামীম/ডাকুয়া