প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২১, ১০:১৩ পিএম
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের
বলেছেন, ‘দলীয়করণের কারণে দেশে সুশাসন নেই।
সরকারি দল না করলে,
পরীক্ষায় প্রথম হয়েও চাকরি পাওয়া
যায় না।’ শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর
বারিধারায় জাতীয় যুব সংহতির এক
সভায় তিনি এসব কথা
বলেন।
বিরোধীদলীয়
উপনেতা বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী কয়েকটি দেশ সফর করে
করোনার টিকা না পেয়ে
দেশে ফিরে এসে গভীর
হতাশা প্রকাশ করেছেন। গণমাধ্যমের সামনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ধনী দেশগুলো নাকি
বাংলাদেশকে টিকা দিতে রাজি
হচ্ছে না। যদি তাই
হয়, তাহলে বিশ্বে বাংলাদেশ বন্ধুহীন হয়ে পড়েছে।’
জি
এম কাদের বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন- বিশ্বে নাকি বাংলাদেশের মর্যাদা
আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ ১৯৯৬ সালে
পাসপোর্ট ভিত্তিক জরিপে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯৬তম। একই
জরিপে বাংলাদেশের অবস্থান নিম্নগামী হতে হতে বর্তমানে
১০৬তম অবস্থানে এসেছে।’
জাতীয়
পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিশ্বে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের
মর্যাদা বাড়তে পারে। কিন্তু সাধারণ মানুষের মর্যাদা মোটেই বাড়েনি, বরং কমেছে। তাই
এখন বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে কেউ দেশের
বাইরে গেলে তাকে নানারকম
হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।’
জি
এম কাদের বলেন, ‘দলীয়করণের কারণে দেশে সুশাসন নেই।
সরকারি দল না করলে,
পরীক্ষায় প্রথম হয়েও চাকরি পাওয়া
যায় না। সরকারি দল
না করলে সর্বনিম্ন দরদাতা
হয়েও টেন্ডারে কাজ পাচ্ছেন না
ঠিকাদাররা। আবার টেন্ডার ছাড়া
কাজ দেওয়ার বিধান করেছে, যা সম্পূর্ণ সংবিধান
পরিপন্থী।’
তিনি
বলেন, ‘সরকারি দলের নেতাকর্মীরা অপরাধ
করেও খালাস পেয়ে যায়, সবার
জন্য আইন সমানভাবে প্রযোজ্য
হচ্ছে না।’
জাতীয়
পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে দেশে তুলনামূলকভাবে বেশি
সুশাসন ছিল। জাতীয় পার্টির
শাসনামলে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে
ছিল না। তাই দেশের
মানুষ মনেপ্রাণে জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির
বিকল্প শক্তি হিসেবে প্রত্যাশা করছে। দেশের মানুষ আবারও জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায়। তিনি এ
সময় দলকে শক্তিশালী করার
পাশাপাশি পার্টির নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই
প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেন।’
জি
এম কাদের বলেন, ‘আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে
সব জেলা কাউন্সিল সম্পন্ন
করতে হবে। ২০২২ সালের
ফেব্রুয়ারি মাসে ৮টি বিভাগীয়
শহরে কর্মী সমাবেশ করা হবে। পরিস্থিতির
উন্নতি হলে বিভাগীয় শহরে
জনসভা করা হবে। তখন
জাতীয় পার্টি রাজনীতির রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।’
তিনি
বলেন, ‘প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নেবে জাতীয়
পাটি। নির্বানের মাধ্যমে গণমানুষের কাছে হুসেইন মুহম্মদ
এরশাদের উন্নয়ন ও সুশাসনের চিত্র
তুলে ধরা হবে।’ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে
সর্বাত্মকভাবে কাজ করার আহ্বান
জানিয়ে জি এম কাদের
বলেন, ‘যারা দলীয় প্রার্থীর
বিরুদ্ধাচরণ করবে তাদের পার্টির
শত্রু হিসেবে
বিবেচনা করা হবে।’
অনুষ্ঠানে
সভাপতিত্ব করেন জাতীয় যুব
সংহতির আহ্বায়ক ও জাতীয় পার্টির
ভাইস চেয়ারম্যান এইচ এম শাহরিয়ার
আসিফ। জাতীয় যুব সংহতির সদস্য
সচিব আহাদ ইউ চৌধুরী
শাহিন সভা পরিচালনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও
জাতীয় মহিলা পার্টির সভানেত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি।
সভার
শুরুতেই জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা এবং করোনায় আক্রান্ত
দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর রোগমুক্তি কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চান
জি এম কাদের।
জেডআই/এম. জামান