• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পার্কের বন্ধু

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৩, ০৮:৫৮ পিএম

পার্কের বন্ধু

পার্কের বন্ধু

শিবাজী সান্যাল

স্ত্রীর অকস্মাৎ স্বর্গারহনের পর থেকে ভীষণ একা হয়ে পরে দিবাকর। ছেলের উপর্যুপরি তাগাদায় তাই কিছু দিনের জন্য মুম্বাই এসেছে। সকালে পুত্র আর পুত্রবধূ দু’জনেই হুড়োহুড়ি করে দুটো মুখে গুজে কাজে বেরিয়ে যায়। তারপর কাজের বউটি আসে। ও চলে গেলে আবার সেই শুধু একাকিত্ব। বিকেলে রোজ কাছের পার্কে হাটতে যায়। সেখানেই কৃষ্ণার সঙ্গে পরিচয়। সুদূর কেরালা থেকে এসেছে ছেলের কাছে। মূলতঃ বাচ্চা মেয়েটিকে ও-ই সারাদিন সামলায়, স্কুল পাঠায়। 
হাঁটার পর একই বেঞ্চে বসে নানা কথা হয়। স্বামী মারা যাবার পর একা হাতে কৃষ্ণা বাচ্চাদের মানুষ করেছে। মেয়ের বিয়ে দিয়েছে। আস্তে আস্তে একে অপরের অনেক কথাই ওরা জেনেছে। কৃষ্ণা দিবাকরের জন্য ব্লাডপ্রেসারের আয়ুর্বেদিক ওষুধ এনে দিয়েছে। দিবাকর ওকে ওদের নানা জায়গা ভ্রমণের ফটো এনে দেখিয়েছে । 


একদিন দিবাকর বলল, “কাল আমার জন্মদিন। যদি ফ্রি থাক তাহলে আমরা দুপুরে কাছের রেস্তোরাঁতে গিয়ে খেতে পারি।” ও রাজি হয়েছিল। কিন্তু রাতভর ভেবেছে কেন দিবাকর ওকে খেতে নিয়ে যাবে ঠিক করলো? আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে ও দু’হাতে মুখ ঢাকলো। কেন জানি এক লজ্জা ...। 
সাতদিন পর ওদের হাটা শেষে সেই বেঞ্চে বসে দিবাকর বলল, “আজই আমাদের শেষ দেখা। কাল আমি কলকাতা ফিরে যাচ্ছি। ”ইচ্ছে করেই ও কথাটি শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেপে রেখেছিল। কৃষ্ণা শুধু একবার অস্ফুট বলল, “কালই!”
এরপর ওরা অনেকক্ষণ বসে রইল। কিন্তু কেউ আর কোনো কথা বলল না। এমনি হয়। মন অনেক কথা বলবার জন্য আনচান করে কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলা যায় না।
 

 

সাজেদ/

আর্কাইভ