প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২২, ০৫:৫৭ পিএম
সেদিন এক দুর্ঘটনায় তোমার শরীরের কিছু অংশ অকেজো হয়ে যায়। দেখেছিলাম মনের ও শরীরের সেই ছটফটানি। সব সময় বলতে, হয়তো আর ঠিক হবে না কখনও। পারবো না আর সবার মতো হতে। কিন্তু আমি হতে চাই সবার মতো, বাঁচতে চাই আমি সুস্থ হয়ে। আরও পাঁচটা মানুষ যেমন ভাবে বাঁচে। আমিও তাদের সমান থাকবো। যতদিন এই পৃথিবী আমাকে তার ধরায় রাখতে চায়। কথা দিয়েছিলাম সেদিন, সুস্থ করার দায়িত্ব আমি নিলাম এবং সেদিন থেকে আজও লাগাতার পাশেই আছি।
বছর দুয়েক কেটে গেছে। অনেক কষ্ট করে তুমি আজ অনেক সুস্থ। আগের মতো হাসতে দেখি তোমায়। ভীষণ ভালো লাগে জানো। কিন্তু একটা জায়গায় এসে আজকাল একটু ভয় পেয়ে সরে আসছি।
মাঝে মাঝে মনে হয় কেউ যেন পিছু নিয়েছে। কেউ যেন বলে ওঠে অনেক হয়েছে আর নয় এবার জায়গা ছাড়ো। চমকে উঠি চিৎকার করে বলি কে..... তুমি কে.....? সাড়া মেলেনি, অথচ সর্বক্ষণ কানের কাছে ভেসে ওঠে কিছু ফিস ফিস শব্দ!
যেদিন তোমার আমার নতুন জন্ম হয়, ভেবেছিলাম বড় ভালো আছি, ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলাম। মনে আছে যখন তুমি কোরোনা আক্রান্ত, বারে বারে ফোন করে জানতে চাইতাম, ভালো আছো তো। এক সময় ফোন না পেলে ছটফট করেছি। হয়তো ভোলোনি। যে দিন হঠাৎ করে এক দিন না বলে গেলাম তোমায় সারপ্রাইজ দিতে, শুনতে পেলাম বাইরে থেকে তোমার ঘরে তখন নাচ গান আর আড্ডার আসর জমে উঠেছে। কিন্তু দেখো একবারও জানতে পারলাম না।
ছুটে পালিয়ে এসেছিলাম সে দিন। পরদিন তুমি আদরে সোহাগে ফোন কলে বলে উঠলে `কতদিন তোমাকে দেখিনি একবারটি আসবে`? বলেছিলাম ‘না সময় নেই বড় ব্যস্ত’, তুমি বললে বেশ অন্তত রাস্তা দিয়ে তো যাবেই, ঘরের গেটের সামনে একটিবার তোমার ওই মিষ্টি মুখটা দেখিয়ে যেও।
খুব অবাক হয়েছিলাম আমি। যেন মনে হচ্ছে জীবনের মূল্যবোধটা কমে গিয়েছে। তাই তোমার বাড়ির গেটের কাছে এসে দেখা দিতে যাবো আর তুমি ‘একঝোলা ভিক্ষা দিয়ে বলবে তোমার কর্তব্যের দাম চুকিয়ে দিলাম।’
আমি তো ভিখিরি নই!
জানি না আজোও কে কতটা আপন?
সজিব/