• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

একটুখানি ভালোবাসা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২২, ০২:২৬ এএম

একটুখানি ভালোবাসা

নবনীতা সই - কলকাতা, ভারত

এ্যাই ওষুধটা এখনও খাওনি? তুমি যে কি করো, ভালোলাগে না। চটপট করো।
আর একটু ঘুমাই।
ঘুমাও তোমারই দেরী হবে।
সত্যি তো, কত দেরী হয়ে গেলো।
তোমাকে বলেছি না, এভাবে লাফ মেরে উঠবে না। হ্যাঁচকা টান লেগে যাবে। 
তোমার আর কাজ কি? সারাদিন এটা করো না আর ওটা করো না। আমার দেরী হচ্ছে, আমি স্নানে গেলাম।
যাও তবে যাবার আগে বাসি মুখে আমার ...
উফ! তোমার বয়েস কমছে না বাড়ছে। 
কমছে। সারাদিন তো কাজের পাহাড়ের নীচে ডুবে থাকো। সকালবেলায় যদি...
ছাড়ো ছাড়ো। কাল কি হয়েছিল মনে আছে?
কি হয়েছিল? আমাদের মাঝে কি হয়? তোমায় তো আমি...
থাক থাক আর নাটক করতে হবে না। কাল সারারাত আমাকে জড়িয়ে ঘুমিয়েছিলে। 
তো? তুমি আমার কোলবালিশ। তোমার গায়ের গন্ধ না পেলে ঘুম আসে না। 
তো? সকালে উঠেই আবার শুরু।
হ্যাঁ শুরু। তোমার বাসি মুখ ছুঁয়ে আমার দিন শুরু। বলো তো স্নান করিয়ে দেবো?
হ্যাঁ তাহলে আর কাজ আজ হবে। যাও।

তবুও তুমি আমাকে পিছন থেকে জাপটে ধরে নাও। তোমার গরম নিঃশ্বাসের মাঝে ডুবে যাই আমি। গলে যাই, ভুলে যাই। নিজেকে খুঁজে পাই। সারাদিনের অক্সিজেন নিয়ে নিই বুক ভরে।

তারপর কর্কশ কলিংবেলের আওয়াজে আমার সত্যিই ঘুম ভাঙে। ক্লান্ত পায়ে, দরজাটা খুলে দুধের জন্য পাত্রটা দিই। গোয়ালা দুধটুকু মেপে দিয়ে চলে যায়। শুরু হয় আমার জীবন। যার কোণায় কোণায় সবকিছু আছে, দায়-দায়িত্ব, কাজ, অবহেলা, সারাদিনের ক্লান্তি নেই এমন একটুকরো ভালোবাসা।

মাঝে মাঝে মনে হয় বড় কি বেশি চেয়ে ফেলেছিলাম? যান্ত্রিক এই জীবন আর অনুভূতিহীন এই বেঁচে থাকা কি খুব প্রয়োজন?

হুট করেই দিন শুরু হয়ে যায়। সবকিছু আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রাখে আমাকে। ভাবার সময় চলে যায় বাতাসের সঙ্গে। ভাবা আর হয় না।

আর্কাইভ