শিবাজী সান্যাল
কয়েক দশক পরে এসেছি ফিরে
শৈশব স্মৃতিময় এই ছোট্ট গ্রামে। তেমনই আছে
বিদ্যালয়, খেলার মাঠ, পুকুর পাড়
মন্দির চত্বরে বিশাল অশ্বথ গাছের শীতল ছায়া
তেমনই সকাল হলো একঝাঁক পাখির কূজনে
তেমনই আছে দীর্ঘ রাঙাপথ, সোনালি ধানের ক্ষেত
দূরের বসতি, কলাগাছ, লিচু, নারকেল, সুপুরি।
প্রভাতী ঘাসের সবুজ শিশিরে রাত ছুঁয়ে আছে
এখনও আলগোছে। মাছরাঙ্গার ব্যস্ততা, কিছু খেয়া
বৈঠার জল ভেঙে ভাটিয়ালি, নৌকোয় রঙিন পাল
সব আছে ঠিক তেমনই, কয়েক দশক পরেও।
পিন্টুকাকার দোকানে দেখা সনাতনের সঙ্গে
বেশ বদলে গেছে বয়সের ভারে, মাথায় টাক
চা হাতে বলল, “কৃষ্ণার খবর জানিস? বেচারি
স্বামী হারিয়ে ফিরেছে গাঁয়ে, পায়নি ছেলেটাও
নিত্যদিন ভাইয়ের সংসারে, ভালো নেই রে মোটে - - । ”
কৃষ্ণা!! দুরন্ত বাতাসের মত ছিল অস্থির
ভরা যৌবন ষোড়শী। বারবার আসত কাছে
কতবার বলেছে, “একটি কবিতা লিখবে আমাকে নিয়ে।”
হয়নি লেখা। শেষ দেখা হয়েছিল বিয়ের আগে একদিন
কিছুই বলেনি, শুধু কেঁদেছিল অঝোরে আঁচল চেপে।
এখন সন্ধ্যা। চারদিকে অগণিত জোনাকি
অবিরাম ঝিঁঝিঁর ডাক, তেমনই আগের মত
সব তেমনই আছে। শুধু বদলে গেছে একটি জীবন।
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন